বিষয়বস্তুতে চলুন

মুসলিম সাহিত্য সমাজ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মুসলিম সাহিত্য সমাজ
গঠিত১৯ জানুয়ারি ১৯২৬ (1926-01-19)
প্রতিষ্ঠাস্থানঢাকা, বাংলাদেশ
বিলুপ্ত১৯৩৬
দাপ্তরিক ভাষা
বাংলা

মুসলিম সাহিত্য সমাজ ছিল বাংলাদেশের একটি 'বুদ্ধির মুক্তি' আন্দোলনের দল বা সংগঠন। ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর সভাপতিত্বে ১৯২৬ সালের ১৯ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুসলিম হল ইউনিয়ন কক্ষে মুসলিম সাহিত্য সমাজ প্রতিষ্ঠিত হয়।[] এটি ঢাকা ইন্টারমিডিয়েট কলেজ (বর্তমান ঢাকা কলেজ) ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন ছাত্র ও শিক্ষকের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়। মুসলিম সাহিত্য সমাজের কর্ণধার ছিলেন কাজী মোতাহার হোসেন, কাজী আবদুল ওদুদ এবং আবুল হুসেন। মুসলিম সাহিত্য সমাজের মুখপত্র ছিলো বার্ষিক প্রকাশিত শিখা পত্রিকা। ১৯৩৬ সাল পর্যন্ত মাত্র এক দশক চলেছিল এই ঢাকা কেন্দ্রিক গোষ্ঠীটির কার্যক্রম।[][]

লক্ষ্য

[সম্পাদনা]

সে সময় অবিভক্ত বাংলার সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া অংশ ছিল পূর্ব বাংলা এবং যার প্রধান শহর ছিল ঢাকা। এ অঞ্চলের সংখ্যাগরিষ্ঠ লোকজন ছিলেন মুসলমান যাদের সামগ্রিক সামাজিক পরিমণ্ডল ছিল শাস্ত্র ও সংস্কারের অচলায়তনে আবদ্ধ। কাজী মোতাহার হোসেনের দ্বিতীয় বর্ষের কার্য বিবরণীতে পাওয়া যায় : “আমরা চাই সমাজের চিন্তাধারাকে কুটিল ও পঙ্কিল পথ হইতে ফিরাইয়া প্রেম ও সৌন্দর্য্যের সহজ সত্য পথে চালিত করিয়া আমাদের দায়িত্ববোধের পরিচয় দিতে। এক কথা আমরা বুদ্ধিকে মুক্ত রাখিয়া প্রশান্ত জ্ঞানদৃষ্টি দ্বারা বস্তু জগত ও ভাবজগতের ব্যাপারাদি প্রত্যক্ষ করিতে ও করাইতে চাই।” [] মুসলিম সাহিত্য সমাজের লক্ষ্য ছিল ধর্ম ও ধর্ম প্রভাবিত মুসলমান সমাজকে বৈজ্ঞানিক যুক্তির পাটাতনের উপর দাঁড় করিয়ে দিতে। মুসলিম সাহিত্য সমাজ করণীয় সম্পর্কে পাওয়া যায় : “মুসলিম সমাজে অনেক গলদ ঢুকিয়াছে। মিথ্যা হাদিস দ্বারা ঐ সবের সমর্থন চলিতেছে; অনেক সময় লোকেরা নিজেদের মতলব হাসিল করার জন্য হাদিস সৃষ্টি করিয়াছে; যে সমস্ত হাদিস বুদ্ধির দ্বারা সমর্থিত নহে তাহা মানিতে হইবে না; কুরআনের ব্যাখ্যা যাহা হইয়া গিয়াছে তাহা ব্যতীত আর হইতে পারিবে না, ইহা ঠিক নহে; কাল ও অবস্থা ভেদে ইহার নতুন ব্যাখ্যা দিতে হইবে।”[]

পাঁচ দফা

[সম্পাদনা]

১৯২৯ সালে মুসলিম সাহিত্য সমাজের তৃতীয় বার্ষিক অধিবেশন শেষে গ্রহণ করা হয়েছিল সমাজ সংস্কারের পাঁচ দফা প্রস্তাব :

  1. এই সভা বাংলার মুসলমান নর-নারীকে বিশেষভাবে হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে সমস্ত বাংগালীকে কোরানের সহিত পরিচিত হইবার অনুরোধ জানাইতেছে।
  2. এই সভা বাংলার পল্লীর বিভিন্ন কেন্দ্রে পাঠাগার ও গ্রন্থাগারের প্রতিষ্ঠায় বিশেষভাবে উদ্যোগী হইবার জন্য দেশের কর্মীদের প্রতি অনুরোধ জানাইতেছে।
  3. এই সভা বাংলার বিভিন্ন মক্তব ও মাদ্রাসায় যাহাতে বাধ্যতামূলকভাবে ব্যায়াম শিক্ষার ব্যবস্থা হয় তজ্জন্য গভর্নমেন্টকে অনুরোধ জানাইতেছে।
  4. এই সভা বাংগালী মুসলমান সমাজের নেতৃবৃন্দকে পর্দাপ্রথা দূরীকরণার্থে আদর্শ স্থাপন করিতে অনুরোধ জানাইতেছে।
  5. এই সভা সাহিত্য সমাজের কর্মীবৃন্দকে মুসলিম ইতিহাস, দর্শন ও ধর্মবিষয়ক আরবী ও ফার্সি গ্রন্থ সমূহ অনুবাদ করিবার জন্য একটি অনুবাদ কমিটি গঠন করিতে অনুরোধ জানাইতেছে।[]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. খোন্দকার সিরাজুল হক (২০১২)। "মুসলিম সাহিত্য-সমাজ"ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিআইএসবিএন 9843205901ওএল 30677644Mওসিএলসি 883871743 
  2. হোসেন, সৈয়দ আনোয়ার; হোসেন, নবীন (২০০৩)। "'শিখা' গোষ্ঠীঃ ঐতিহাসিক পরিপ্রেক্ষিত পর্যালোচনা"। যুগান্তর, ঈদ সংখ্যা। মাজহারুল ইসলাম: ৭৪।  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য);
  3. হোসেন, সৈয়দ আনোয়ার; হোসেন, নবীন (২০০৩)। "'শিখা' গোষ্ঠীঃ ঐতিহাসিক পরিপ্রেক্ষিত পর্যালোচনা"। যুগান্তর, ঈদ সংখ্যা। মাজহারুল ইসলাম: ৭৫।  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য);

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]

বাংলাপিডিয়ায় মুসলিম সাহিত্য সমাজ উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন

pFad - Phonifier reborn

Pfad - The Proxy pFad of © 2024 Garber Painting. All rights reserved.

Note: This service is not intended for secure transactions such as banking, social media, email, or purchasing. Use at your own risk. We assume no liability whatsoever for broken pages.


Alternative Proxies:

Alternative Proxy

pFad Proxy

pFad v3 Proxy

pFad v4 Proxy